ফেনী ইউনির্ভার্সিটিতে ‘বঙ্গবন্ধুর গল্প শুনি, মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলি’

0
493

সারাবেলা প্রতিবেদক : বছরব্যাপী দেশজুড়ে ‘বঙ্গবন্ধুর গল্প শুনি, মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলি’ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘আজ সারাবেলা’ ও ‘সুচিন্তা ফাউন্ডেশন’।

২৭ সেপ্টেম্বর বৃহষ্পতিবার সকালে ফেনী শহরের ফেনী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর মাঝে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- ফেনী ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর তায়বুল হক। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার নানা অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরেন। এসময় বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পড়ার আহ্বান জানান শিক্ষার্থীদের। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রচিত বইসমূহ পড়ারও আহ্বান জানান তিনি।

মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর তায়বুল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধ কোনো গল্প নয়; এটা হলো ইতিহাস। গল্পতো ইনিয়ে-বিনিয়ে বলা হয়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ হল- সুদীর্ঘ নয় মাসের রক্ত, ঘামের ইতিহাস।

নিজের অভিজ্ঞতার সম্পর্কে তিনি বলেন, ক্যাম্পে থাকাকালে টানা সাত থেকে দশ দিন ঠিক মত খেতে পারিনি। এরপর যখন একটু ভাত খাওয়ার সুযোগ পেয়েছি, তখন দেখি ভাতে পোকা। সেই পোকা বেছে বেছে ভাত খেয়েছি আমরা। জীবনের মায়া করিনি দেশ রক্ষা করাই ছিল আমাদের মূল উদ্দেশ্য।

তিনি আরো বলেন, ৭৫ এর পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পরিবর্তন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। ঐ সময়টায় বঙ্গবন্ধুর নাম নেয়া যেত না। রাজাকারকে রাজাকার বলা যেত না। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হয়নি। সাহিত্যিক, কবি, লেখক ও সৃজনশীল ব্যক্তিরা তাদের সৃষ্টিশীল কর্মের মাধ্যমে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরেছেন।

বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে এই প্রফেসর বলেন, ১৯৭০ সালের ১১ মার্চ। দিনটি ছিল বুধবার। ঐদিন চৌমুহনী চৌরাস্তায় সভা করে ফেরার সময় বঙ্গবন্ধুর গাড়ি বহরে ছিলাম। পথিমধ্যে এক বৃদ্ধা শেখ মুজিবকে দেখার জন্যে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। ঐ বৃদ্ধা বঙ্গবন্ধুর শরীর স্পর্শ করে অনেক দোয়া করে বলেন, শেখ মুজিব তোমাকে দেখার অনেক ইচ্ছা ছিল। আজ সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। আমার জীবনে আর কিছু চাওয়ার নাই। দেশের সবার দোয়া ছিল বঙ্গবন্ধুর জন্য। তাই তো তিনি একটি দেশ আমাদের উপহার দিতে পেরেছেন।

প্রফেসর তায়বুল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমাদের প্রজন্ম স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। এদেশ এমন সাজানো গোছানো ছিল না। তোমাদের শেকড়’কে জানতে হবে। দেশ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় অবদান রাখতে হবে, তৈরি করতে হবে একটি আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র।

বক্তব্যের শেষে আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান এবং শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেমিক হবার আহবান জানান।

অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ফেনী ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. মো. সাইফুদ্দিন শাহ বলেন, জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে তরুণ প্রজন্মের মাঝে একটি চেতনা ধারণ করতে হবে। সেটা হলো- বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এই চেতনা ধারণ না করলে দেশকে ভালবাসা যাবে না। আর দেশকে ভালবাসতে না পারলে জাতি কখনো এগিয়ে যাবে না।
অনুষ্ঠানে ফেনী ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন বিভাগ ও অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শেষে ‘আজ সারাবেলা’ ও সুচিন্তা’র পক্ষ থেকে ফেনী ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. মো. সাইফুদ্দিন শাহ’র হাতে ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, সিআরআই থেকে প্রকাশিত তিন পর্বের কমিক নভেল ‘মুজিব’ ও সুচিন্তা-আজসারাবেলা’র লোগো সম্বলিত ‘মগ’ তুলে দেন ‘আজ সারাবেলা’র সম্পাদক জববার হোসেন ।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ‘আজ সারাবেলা’র সম্পাদক জববার হোসেন। সহ-সমন্বয়ক ছিলেন সিদ্দিক আশিক।

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই প্রচারাভিযানের মিডিয়া পার্টনার ‘দৈনিক খোলা কাগজ’ ও ‘পরিবর্তন ডট কম’।

আয়োজিত কার্যক্রমের সার্বিক সহযোগিতায় ছিল মার্কেন্টাইল ব্যাংক লি ও আয়োজন সহযোগি ছিল ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।

আজসারাবেলা/সংবাদ/রই/জাতীয়/মুক্তিযুদ্ধ